জয় দিয়ে মিশন শুরু বাংলাদেশের
বাংলাদেশ দারুণ বোলিং নৈপুণ্য দেখিয়ে লঙ্কানদের আটকে ফেলে অল্পতেই, মাত্র ১২৪ রানে। বিশ্বকাপ আসরে এই লক্ষ্যটুকু সহজেই পাড়ি দেবে বাংলাদেশ- প্রত্যাশা ছিল এমনটাই। শ্রীলঙ্কাকে ১২৪ রানে বেঁধে ফেলার পর শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল বাংলাদেশ। লিটন-হৃদয়ের ৬৩ রানের জুটি সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করলেও শেষ দিকে হাসারাঙ্গা-থুশারার তোপে খেই হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। তারপরও শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতে ২ উইকেটের ‘কোনোরকম’ জয় দিয়ে আসর শুরু করতে সমর্থ হয়েছেন শান্তরা। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলতে নেমে রিশাদ হোসেন হয়েছেন ম্যাচসেরা।
ইনিংস শুরুর ১০ বলের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার। আর ৬ষ্ঠ ওভারে একই পথের পথিক হন অধিনায়ক শান্ত।
ধনঞ্জয়া ডি সিলভার প্রথম ওভারেই রানের খাতা খোলার আগে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন সৌম্য সরকার। অহেতুক শটে মিড অনে হাসারাঙ্গার হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে ৩ রান করে নুয়ান থুশারার বলে বোল্ড হয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে শান্তর উইকেটও তুলে নেন থুশারা। ১৩ বলে ৭ রান করেন শান্ত।
২৮ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ যখন কালো মেঘের নিচে ঢাকা এক পশলা রোদের মতো হাজির হন তাওহীদ হৃদয়। সঙ্গী হিসেবে পান টানা বাজে ফর্মে থাকা লিটন দাসকে। দুজন মিলে গড়েন ৩৮ বলে ৬৩ রানের জুটি। যেখাানে অবশ্য ৪০ রানের অবদান হৃদয়েরই। ১২তম ওভারে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার প্রথম তিন বলে টানা তিন ছক্কা হাঁকান হৃদয়। গ্যালারিতে থাকা এক টুকরো বাংলাদেশ তখন নিশ্চিত জয়ের আনন্দে বিভর। পরের বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে যান হৃদয়। ২০ বলে ১ চার ৪ ছক্কায় করেন ৪০ রান।
৬ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশ তখন জয় থেকে মাত্র ৩২ রান দূরে। হাতে রয়েছে ৪৮টি বল। মাঠে আছেন ছন্দে ফেরা লিটন। শঙ্কা কীসের! তবে ৮ রান যোগ হতেই লিটনকেও লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন হাসারাঙ্গা। ৩৮ বলের বিপর্যয় কাটানো ইনিংসে তিনি করেন ২ চার ১ ছয়ে ৩৬ রান।
সাকিব-মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে থাকলেও পারছিলেন রান তুলতে। সেই সময় সাকিবের উইকেট তুলে নেন পাথিরানা। ৪ রান পর বাংলাদেশ ইনিংসে বিষকামড় বসান লঙ্কান পেসার নুয়ান থুশারা। পর পর দুই বলে তুলে নেন রিশাদ ও তাসকিনের উইকেট। বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে ৮ উইকেট। ম্যাচে ১৮ রান দিয়ে তিনি ফেরান চার ব্যাটসম্যানকে।
শেষ ১২ বলে প্রয়োজন গিয়ে ঠেকে ১১ রানে। ওই মুহূর্তে উত্তেজনার পারদ চূড়ায় তুলে দাসুন শানাকার করা ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাকি রানটুকুও আসে ওই ওভারেই। ১৩ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান রিয়াদ।
তার আগে শ্রীলঙ্কার শুরুটা হয়েছিল দারুণ। পাওয়ার প্লেতে তারা তোলে ২ উইকেটে ৫৩ রান। দলীয় ১০০ রান ছুঁয়ে ফেলে ১৪ ওভার শেষ হতেই। এর পর থেকে প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখেন বাংলাদেশের বোলাররা। ১৫তম ওভারের প্রথম দুই বলেই জোড়া আঘাত হানেন রিশাদ। ওই ওভারে দেন ৩ রান। পরের ওভারে তানজিম উইকেট না পেলেও দেন ৬ রান। শেষ চার ওভারে লঙ্কানরা তুলতে পারে ৩, ৩, ২ ও ৭ রান। ৪৩ বল পর প্রথম শ্রীলঙ্কার প্রথম বাউন্ডারি আসে তানজিমের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে।
এ ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তার শিকার ৩ উইকেট। ৩ উইকেট শিকার করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলতে নামা তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনও। ২২ রানে ৩ ব্যাটারকে ফেরান তিনি। ইনজুরি থেকে ফিরেই ২৫ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন। ১টি উইকেট পান তানজিম।
টিএ