নোবিপ্রবিতে ছাত্র সংসদের আড়ালে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের পায়তারা
নোবিপ্রবি ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বলেছেন, জাহিদুল ইসলাম হাসান এর নেতৃত্বে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগের ছেলেদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে, যাতে করে সে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগকে নির্বিঘ্নে ক্যাম্পাসে পূনর্বাসন করতে পারে। তাদের এই বিক্ষোভ ছিল সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থাকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাথে দারুচিনি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন ইসলামি ছাত্র আন্দোলন নোবিপ্রবি শাখার নেতৃবৃন্দরা।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল বশর আজিজী আগমনকে কেন্দ্র করে নোবিপ্রবি ছাত্র ঐক্য সংসদ বিক্ষোভ মিছিল করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইসলামি ছাত্র আন্দোলন। এছাড়াও নোবিপ্রবি প্রশাসনের প্রতি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাদের এই বিক্ষোভ ছিল সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থাকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে।নোবিপ্রবির ছাত্র ঐক্য সংসদ নামক একটি অবৈধ এবং প্রশাসনিক অনুমোদনহীন সংগঠনের ব্যানারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে। উক্ত বিক্ষোভ মিছিলে নোবিপ্রবির কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ ছিল না এবং একই সাথে ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ-প্ল্যাটফর্ম থাকার পরও তাদের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা না করে এবং নোয়াখালীর নেতৃত্বদানকারী ক্যাম্পাস সমন্বয়ক (যদিও এখন সমন্বয়ক পরিচয় নেই) থাকার পরও তাদের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ না করে জাহিদুল ইসলাম হাসান এর নেতৃত্বে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগের ছেলেদের নিয়ে উক্ত বিক্ষোভ মিছিল করে।
তারা আরো বলে, আমাদের কেন্দ্রীয় সভাপতির সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময়ের একটি ছবি আমাদের একজন সাবেক দায়িত্বশীল তার নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন। এরই প্রেক্ষিতে জাহিদুল ইসলাম হাসান নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে ওই পোস্টের স্ক্রীনশট আমাদের নজরে আসে এবং সাথে সাথেই তারা আমাদেরকে না জানিয়ে ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে প্রায় ১২:২০ মিনিটের দিকে নোবিপ্রবি ছাত্র ঐক্য সংসদ নামক একটি অবৈধ এবং প্রশাসনিক অনুমোদনহীন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ঘোষণা করে।
এই দিকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জীবনের নিরাপত্তাসহ ৫ দফা দাবি করেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের চাওয়া ৫ দফা দাবিগুলো হলো:
১. নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিকে নিষিদ্ধ মর্মে কোনো অফিশিয়াল রেজুলেশন বা আইন প্রণয়ন হয়েছে কি না? তা স্পষ্ট করতে হবে।
২. মধ্যরাতের এই বিক্ষোভ করার জন্য ছাত্র ঐক্য সংসদ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে কি না?
৩. ক্যাম্পাসে বর্তমান স্বৈরাচারের দোষর মুক্ত শক্তিশালী প্রশাসন থাকার পরও কিভাবে অবৈধ, অনুমোদনহীন সংগঠন গভীর রাতে ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসলীগদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং প্রয়াসনিক ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তালা দেওয়ার হুমকির মতো দুঃসাহস করে? তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ এই অবৈধ অনুমোদনহীন সংগঠন বিলুপ্তি এবং নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে এটা নোবিপ্রবি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণের দাবি।
৪. ক্যাম্পাসে বর্তমান ক্লাবগুলো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ মুক্ত ক্লাব নিশ্চিত করতে হবে।
৫. তারা আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, এরজন্য আমরা প্রশাসনের কাছে এবং রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাই।
এসময়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নোবিপ্রবি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ খলিলুল্লাহ,নোয়াখালী জেলা দক্ষিণের ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান,
নোয়াখালী কলেজ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আজাদ নূর জাফর। উল্লেখ্য, নোবিপ্রবি প্রশাসন আগষ্টে মাসে জরুরি রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ করে।
এএজি