সংবিধান সংস্কারে, সংসদের প্রতিনিধি লাগবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার কমিটি দিয়েই সংবিধান সংস্কার হবে না। ওটা করতে গেলে সাংবিধানিক কিংবা সংসদের প্রতিনিধি লাগবে। সেটার জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। একই সঙ্গে সবচেয়ে প্রধান যে জিনিসটা দরকার, সেটা হলো নির্বাচন। মানুষ যেমন পরিবর্তনের জন্য জীবন দিয়েছে, তেমনি নির্বাচনের জন্যও প্রাণ দিয়েছে। যে নির্বাচনের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে, সেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা বিএনপির আয়োজিত 'ফ্যাসিবাদ বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন: আজকের প্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা' শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে বড় ক্রান্তিকাল। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ফ্যাসিস্টকে বিদায় দিয়েছি। আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে। আমাদের সঠিকভাবে রূপান্তর ঘটাতে হবে, যে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, চেতনাকে ফিরে এনে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক, মানবিক মূল্যবোধ, কল্যাণকর দেশ গড়তে হবে। আমাদের সামনে এটাই লক্ষ্য।
হঠাৎ করেই কোনো কিছু পরিবর্তন করে ফেললে হবে না। সেটা কতটা টেকসই সেই চিন্তাও করতে হবে। তার জন্য গণতান্ত্রিক পথে যেতে হবে। তারা যদি বলত বিপ্লবী সরকার গঠন করেছি, তাহলে বিপ্লবী সরকার করত। আমাদের কিছু বলার ছিল না। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিপ্লবী সরকার নয়, সাংবিধানিক সরকার। আপিল বিভাগ থেকে এই সরকারের বৈধতা নেওয়া হয়েছে। ওটাকে ধরে রেখেই আমাদের এগোতে হবে।
বিগত দেড় দশকে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম, হামলা, মামলার কথা তুলে ধরে মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের গোলটা দিয়েছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। এটা অস্বীকার করা যাবে না। এজন্য তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা যাবে না। একাত্তরকে ধারণ করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতান্ত্রিক, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দিয়ে আমরা এই ভূ-খণ্ড পেয়েছি। যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। ৩০ লাখ শহিদ, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম দিয়েছে, সেই গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। অনেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে বলছে। আমরা এটাকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে পারি না। একই সঙ্গে ৭ই নভেম্বরকে আমরা ভুলতে পারি না।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, মানবাধিকার সংগঠক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, ক্রীড়া সংগঠক চিন্ময় সাহা, যশোর আদালতের জিপি শেখ আবদুল মোহায়মেন, কওমি মাদ্রাসা খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন প্রমুখ।
এএজি