তপশিলের আগে আবারও হতে পারে আরপিও সংশোধন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে গেজেট জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংশোধিত অধ্যাদেশে নির্বাচনে জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান বাধ্যতামূলক করাসহ একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই বিধানের কট্টর বিরোধিতা করছে বিএনপি ও তাদের সমমনা কয়েকটি দল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কিছু দল এই সংশোধনীকে স্বাগত জানিয়ে তা বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশের প্রধান প্রধান দলগুলোর এমন বিভক্তির প্রেক্ষাপটে সংশোধিত আরপিও নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে আবারও সংশোধন হতে পারে। বিশেষ করে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধানটি বাতিল করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
জোটবদ্ধ হয়েও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে গেলে ছোট দলগুলোর প্রতীক পরিচিতি না থাকার কারণে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে— এমন আশঙ্কায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে। আরপিওতে এই সংশোধনীর বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনেও আপত্তি জানিয়েছে তারা। সংশোধিত আরপিওর গেজেট প্রকাশ হলেও দলগুলোর চাওয়া অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের তপশিলের আগেই আরপিও ফের সংশোধন হবে বলে আশাবাদী তারা।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একবার ভোটের তপশিল বা সময়সূচি ঘোষণা করা হলে সেই নির্বাচনটি তপশিল ঘোষণার সময় বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা অনুসারেই অনুষ্ঠিত হয়। সেজন্য ভোটের তপশিলের আগেই আরপিও সংশোধন হয়ে থাকে এবং সেই আরপিও অনুযায়ী তপশিল ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সাধারণ নিয়ম এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্থিতিশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে ভোটের তপশিল ঘোষণার পর আরপিও সংশোধন করার সুযোগ সাধারণত থাকে না। তবে সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটের তপশিলের পরও আরপিও সংশোধন হতে বাধা নেই, তবে সেটি হবে ব্যতিক্রম ঘটনা। যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, যার জন্য তাৎক্ষণিক আইনি পরিবর্তন আবশ্যক, সেক্ষেত্রে সরকার বা নির্বাচন কমিশন সংবিধানের ক্ষমতাবলে জরুরি ভিত্তিতে বিধি বা উপবিধি পরিবর্তন করতে পারে। ফলে আরপিও নিয়ে সদ্য প্রকাশিত গেজেটই শেষ কথা নয়। তপশিলের আগে বা পরে যে কোনো সময় আরপিও আবার সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
কেএ