৪ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ, ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন
এক দফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ সংলগ্ন ফ্লাইওভারের নীচে রেলপথের উপরে অবস্থান নেয় তারা। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আহমেদ হোসেন মাসুম বলেন, এখন পর্যন্ত ঢালারচর থেকে চাপাইনবাবগঞ্জ অভিমুখী ঢালারচর এক্সপ্রেস, খুলনা টু রাজশাহী অভিমুখী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস এবং ঢাকা টু রাজশাহী অভিমুখী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। আন্দোলনটি আরো দীর্ঘায়িত হলে, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের সংখ্যা আরও বেড়ে যেতো।
এর আগে, সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে জড়ো হয়ে সেখান থেকে মিছিলসহ গিয়ে রেলপথে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি হলো- সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন বিভিন্ন বিভাগের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। কারো হাতে প্ল্যাকার্ড, কারো মাথায় স্লোগান লেখা ফিতা বাধা। মাঝেমধ্যে পরিবেশন করা হচ্ছে বিপ্লবী ও হাস্যরসাত্নক গান। ছাত্রদের পাশাপাশি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন শতাধিক ছাত্রীও। রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি মোড়ের চারটি সড়কও ব্লক করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময়, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘১৮ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’সহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান তারা।
সার্বিক বিষয়ে কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক রেজওয়ান গাজি মহারাজ বলেন, আমরা এর আগে মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ সভা এবং মহাসড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু আমাদের দাবি না মেনে কর্তৃপক্ষই আমাদের রেলপথ অবরোধের মত কর্মসূচি দিতে বাধ্য করেছে। আমাদের দাবি আদায় না হলে, আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৬ জুন থেকে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।এর আগে, মানববন্ধন, সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মহাসড়ক অবরোধের মত কর্মসূচি পালন করেছে তারা।
টিএ