গুলি আর বোমায় রণক্ষেত্র রাজশাহী, আহত অর্ধশতাধিক
দফায় দফায় সংঘর্ষে রাজশাহী মহানগর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে ওঠে। সোমবার (০৫ আগস্ট) বিকের পৌনে ৫টার দিকে মুহুর্মুহু গুলি আর বোমার শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মহানগরীর আলুপট্টি এলাকা।
সংঘর্ষ চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডসহ নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো রাজশাহী নগরীতে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে সরকারের দেওয়া কারফিউ উপেক্ষা করে সোমবার বেলা ১১টা থেকে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে নগরীর জিরোপয়েন্টের দিকে আসতে থাকেন। সেখান শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর আলুপট্টি এলাকায় পৌঁছলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে প্রথমে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
পরে আন্দোলনকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে সামনের দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলি ও বোমা ছুড়তে থাকে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে পিছু হটে আবারও সামনের দিকে এগোতে থাকেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ও শক্তিশালী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। অপরপ্রান্ত থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিস্তুল উঁচিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলা রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষে অন্তত ৫০ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে গুলিবিদ্ধদের নাম জানা যায়নি।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে পঞ্চাশজন আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ ছিল। হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের ডিসি হাফিজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ব্যানারে যারা আন্দোলন করছে তারা দুর্বৃত্ত-সন্ত্রাসী। তারা নগরীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা-অগ্নিসংযোগ করেছে। পরে সন্ত্রাসীরা সাহেব বাজার এলাকার দিকে আসতে চাইলে পুলিশ প্রতিহত করে। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এএজি