ময়মনসিংহে বন্যায় ক্ষতি ৩২৪ কোটি টাকা
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ায় ধীরগতিতে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। সীমান্তবর্তী এ দুই উপজেলায় বন্যায় প্রায় ৫৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৭৫ জন খামারি। আর আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে ২৬৯ কোটি টাকার।
গত ৪ অক্টোবর পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন লাখো মানুষ। জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, বন্যায় হালুয়াঘাট উপজেলার ৬ হাজার ১৫০টি মাছের খামার সম্পূর্ণভাবে পানিতে ডুবে যায়। এতে ৪ হাজার ২০ জন খামারির ১ হাজার ১২০ টন মাছ ও ৫০ টন পোনা ভেসে যায়। ফলে ২২ কোটি টাকার মাছ ও ৭৫ লাখ টাকার পোনার ক্ষতি হয়েছে।
ধোবাউড়া উপজেলায় ৪ হাজার ২৯৬টি মাছের খামার সম্পূর্ণভাবে পানিতে ডুবে যায়। এতে ভেসে যায় ২ হাজার ৮৫০ খামারির ২ হাজার ১৪৫ টন মাছ ও ১২ টন পোনা। ফলে ৩২ কোটি ১৮ লাখ টাকার মাছ ও ৫০ লাখ টাকার পোনার ক্ষতি হয়েছে।
ধোবাউড়ার পোড়াকান্দুলিয়া গ্রামের মাছের খামারি কামরুল মিয়া জানান, গত ১২ বছর ধরে খামারে দেশীয় মাছের চাষ করে আসছেন। ৪ অক্টোবর মধ্যরাতের পর বন্যার পানিতে খামার তলিয়ে তাঁর প্রায় ২০ লাখ টাকা মাছ ভেসে গেছে। তিনি বলেন, মাছ চাষের জন্য সরকারি দুটি ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। এখন কীভাবে এ টাকা পরিশোধ করব ভেবে পাচ্ছি না।
ময়মনসিংহ জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজিম উদ্দিন জানান, বন্যাকবলিত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তালিকা শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এদিকে, বন্যায় ধোবাউড়ায় ১৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমির আমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ ১৩৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ধোবাউড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার তুষার বলেন, কৃষকদের এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সময় লাগবে। আর হালুয়াঘাটে ক্ষতি হয়েছে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ধান, যার পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি টাকা।
হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে পুনর্বাসনের মাধ্যমে কৃষকরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন, সেই চেষ্টা করব।
এএজি