লেখক কলম দিয়ে সমাজকে বিনির্মাণ করে: ইবি উপাচার্য

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মাদ নসরুল্লাহ বলেন, সভ্যতার ইতিহাস যারা বিনির্মাণ করেছেন, বিপ্লব ঘটিয়েছেন তারা সবাই লেখক ছিলেন। লেখক কলমের মাধ্যমে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন ঘটিয়ে সমাজকে বিনির্মান করে। এজন্য লেখক সন্ত্রাস হয় না, হয় শান্তিপ্রীয়। আমার মতে লেখা তিন ধরনের সৃষ্টিশীল, ইনফরমেটিভ এবং গবেষণামূলক। ক্যাম্পাসের সবাই লেখালেখি করলে বিশ্ববিদ্যালয় মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হবে। এজন্য তোমরা যারা লিখবে তারা লেখার নৈতিকতা মেনে লিখবে। যা মানুষের উপকারে আসে না ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু লিখবেননা।
বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার আয়োজনে ‘লেখক সম্মেলন ও সম্মাননা অনুষ্ঠান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এসব কথা বলেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে প্রায় শতাধিক তরুণ লেখকদের অংশগ্রহণে এ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আরও বলেন, পাঠকের মৃত্যু ঘটে কিন্তু লেখকের মৃত্যু হয় না। কারণ লেখার মৃত্যু ঘটে না। জ্ঞানের সমৃদ্ধির ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় লেখনির মাধ্যমেই পৃথিবীতে জ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়েছে। লেখা সমাজদর্শনকে মানুষের কাছে তুলে ধরে, লেখার মাধ্যমেই সমাজকে চেনা যায়। কুরআনের প্রথম দিকের আয়াত নাযিল হয়েছে কলমকে উল্লেখ করে।
সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি খায়রুজ্জামান খান সানির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.নকীব মোহাম্মাদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ড.শাহিনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, টিএসসিসি পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ও আই আই ই আর পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল হোছাইন।
প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল করীম। এছাড়াও বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমজাদ হোসেন হৃদয়, উপদেষ্টা আবু তালহা আকাশ, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান, ইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তাজমুল জায়েমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সদস্য তুহিন বাবু ও মহিমা খান।
এসময় অনুষ্ঠানে নবীন সদস্যদের বই ও কলম প্রদানের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় এবং বিদায়ী সদস্যদের সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল করীম বলেন, তরুণদেরকে চিন্তা করতে হবে, ভাবতে হবে। আমি লেখাপড়া করেছিন তারপর ৬২ বছর ধরে পড়াচ্ছি। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে উঠেছি, বসেছি, খেলেছি। আমার বয়স আটাশি হতে পারে, কিন্তু আমি তরুণ। আমি তরুণদের সাথেই থাকি।
উল্লেখ্য, ‘সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হোক লেখনীর ধারায়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের যাত্রা শুরু হয় ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৯ সালে। বর্তমানে দেশের ১৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর টানা চার বার ‘বর্ষসেরা’ শাখা নির্বাচিত হয় ইবি শাখা। তরুণদের মাঝে লেখালেখির আগ্রহ জাগ্রত করার পাশাপাশি সংগঠনটি সমাজ বিনির্মান ও সংস্কারেও কাজ করে আসছে।
এএজি