পিনাকী ভট্টাচার্যকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল সিটিটিসির

এ মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিককে অভিযুক্ত করা হয়। তবে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় আরেক আসামি খালেদা জিয়ার উপ-প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিটিটিসি উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য হওয়ায় দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট  দেয়া হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় একজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছি।

আদালত থেকে জানা গেছে,  গত ৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিটিটিসি উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ( ২৫ এপ্রিল) মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। এ মামলায় আসামি মফিজুর জামিনে রয়েছেন।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর পরিচিত এবং তারা দেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করার প্রয়াসে, বিভিন্ন সময়ে উসকানিমূলক তথ্য প্রচারে সর্বদা লিপ্ত থাকেন। বর্তমান সময়ে আসামি পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুক পেজ ও আইডিতে বিভিন্ন সময়ে উসকানিমূলক মিথ্যা-ভিত্তিহীন তথ্য গুজব আকারে প্রচার করছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে বর্তমান সময়েও দেশ ও দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াসে গুজব ও মিথ্যা তথ্য সম্প্রচার করছেন। যা উসকানিমূলক ও এজাহারের বিষয় বস্তুর সদৃশ্য কর্মকাণ্ডকে প্রতিনিধিত্ব করে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি মো. মফিজুর রহমান আশিক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, ডিজিটাল উপায়ে ফেক আইডি দিয়ে তার প্রেরিত ও প্রকাশিত ছবিগুলো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন হয় এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। যা পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার উপক্রম হয়। এই ছবি মোবাইলে ধারণ, প্রেরণ ও প্রচার করে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরণ করে, বিভ্রন্তিকর ও প্রোপাগান্ডামূলক মিথ্যা পোস্ট করা ও প্রচার প্রচারণায় যুক্ত থাকায় এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২৪/২৫/৩১/৩৫ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

আসামি মো. মফিজুর রহমান আশিক ছবিসমূহ প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে তার সহযোগী পিনাকী ভট্টাচার্যকে ফেসবুকে পাঠান৷ উক্ত বিষয় সম্পর্কে উভয়ের মধ্যে ফেসবুক আইডিতে চ্যাটিংয়ের তথ্য পাওয়ায় সহযোগী হিসেবে পিনাকীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/৩১/৩৫ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। অপর আসামি মুশফিকুল ফজল আনসারীর বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণে সহায়ক কোনও সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপ-পরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারী নামের অপর দুজনকে আসামি করা হয়।

এদিকে পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে  ১৮ ফেব্রুয়ারি  সিলেটে সাইবার ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সিলেট জেলা সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান  সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর ২৪, ২৫, ২৬, ২৯, ৩১ ও ৩৩ ধারায়  আরেকটি  মামলা দায়ের করেন। পিনাকী ভট্টাচার্য ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নাজমুল ইসলাম, শাহরিয়ার হোসেন সাকিব (এসএইচ), ফেসবুক ‘ফাইট ফর ডেমোক্রেসি’র অ্যাডমিন শাকিল আহমেদ, মো. হাসান মিয়া (হাসান), মো. আব্দুল হাদী ও মো. রেজউল করিম। জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত ও এডিট করে ব্যঙ্গাত্মকভাবে ফেসবুকে প্রচার ও ভাইরাল করায় এ মামলা করা হয়।
এএজি