মৃদু শৈত্যপ্রবাহে রসুন নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
দিনাজপুরের খানসামায় এবারো কৃষকরা সাদা সোনা খ্যাত রসুনের আবাদ করছেন। বিগত বছরগুলোতে রসুনের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এর চাষ বাড়ছেই। এবারও বেড়েছে এর চাষ। ফলনও ভালোর আশা। কিন্তু দিনাজপুরে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার সাথে শীতের তীব্রতায় রসুন গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে টিপবার্ন রোগ।
কীটনাশক স্প্রে করেও মিলছে না সুফল। আশংকায় পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামার কৃষক-কিষানিরা। গতবছরে রসুনের মাধ্যমে লাভবান হলেও এবার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ বলছে, এটি আবহাওয়াজনিত সমস্যা। দুশ্চিন্তার কিছু নয়। এসময় বাড়তি যত্ন করলে শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলে রসুনের এ সমস্যাও কেটে যাবে।এদিকে, সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।
সোমবার খানসামা উপজেলার জুগীরঘোপা, গোয়ালডিহি, হাসিমপুর, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রামে দেখা যায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে রসুনের চাষ হয়েছে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে জেঁকে বসা শীত ও ঘন কুয়াশায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এটি টিপবার্ন রোগ বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে খানসামার ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর।
কৃষকরা জানায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪৫-৬০ মণ। প্রতিমণের বর্তমান বাজারমূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। তাই খরচ বেশি হওয়ার পরও ভালো লাভের আশা করছেন তারা। যদিও গাছের পাতার রং পরিবর্তন চিন্তায় ফেলেছে।
গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়া এলাকার রসুনচাষি রিশাদ শাহ বলেন, রসুনগাছের পাতার রং এমন পরিবর্তন হচ্ছে দূর থেকে দেখলে মনে হয় সরিষার খেত। কীটনাশক ও স্প্রে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে পরিচর্যা করেও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি। এমনিতেই বীজ ও সার-কীটনাশকে খরচ হচ্ছে। শঙ্কায় পড়েছি।
খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, এবার শীত বেশি হওয়ায় টিপবার্ন রোগটা বেড়েছে। তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে এই অবস্থার উন্নতি হবে। কৃষকদের সচেতনতার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তাই আতঙ্কিত না হয়ে যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এএজি