চলনবিলের মাঠে হলুদ সরিষার সমারোহ
দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিল অধ্যুষিত পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষার ফুলের সমারোহ। শীতের সোনাঝরা রোদে মাঠজুড়ে যেন ঝিকিমিকি করছে সরিষার হলুদ ফুল। দিগন্তজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর চলনবিলে সরিষা চাষ অনেক বেশি হয়েছে। চাটমোহর উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪০০ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, দেশে ভোজ্য তেলের ঊর্ধ্বগতি, সয়াবিন তেল নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। সরিষার তেল স্বাস্থ্যসম্মত, স্বল্প খরচ ও লাভজনক হওয়ায় এ ফসল আবাদে আগ্রহী হয়েছেন তারা।
চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল আলীম বলেন, বিল থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় তিনি পাঁচ বিঘা সরিষার আবাদ করেছেন। ভালো ফলন হবে আশা করছি। নিমাইচড়ার সমাজ গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, এ বছর তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ভালো দাম পেলে লাভের মুখ দেখবেন তিনি। উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, সরিষা চাষ এখন লাভজনক। এলাকায় দিন দিন সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা। এবার এ অঞ্চলে উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-৯, ১১, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, বিনা-৪, টরি-৭ জাতের ও স্থানীয় জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি এলেও দ্রুত মাঠ থেকে তা নেমে যায়। বিল জলাবদ্ধ না থাকায় অনেকেই সরিষা বীজ ফেলেছে। এ বছর সরিষা আবাদ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪০০ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৪ হাজার ৫০০ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষককে সচেতন করা হয়েছে।
এমআইপি