৩৩ দিনেও হলের অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নেই
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) এর স্বাধীনতা দিবস হল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার ৩০ দিন অতিবাহিত হলেও শুরু হয়নি বিচার প্রক্রিয়া। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর স্বাধীনতা দিবস হলের ৩০২ নং কক্ষে অবস্থানরত এক শিক্ষার্থীকে কয়েকজন এসে নিজেদেরকে ছাত্রদলের কর্মী পরিচয় দিয়ে বলেন, এই সিট থেকে নেমে যেতে হবে। আজ থেকে ছাত্রদলের রাকিব ভাই থাকবেন। এ সময় তাদের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা ও ঘন্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। উত্তেজনার এক পর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। এই ঘটনার পর প্রোভোস্ট হলে আসলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হলের রুমগুলো রেড দেয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে হল প্রোভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে সাথে নিয়ে হলের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুলসংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন। এ সময় দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
তবে ঘটনার ৩৩ দিন অতিবাহিত হলেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি তদন্ত কমিটি গঠনের।
এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল মুমিন বলেন, "প্রশাসন আমাদেরকে বলেছিল তারা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি পর্যন্ত গঠন করতে পারেনি। আমার এখন প্রশ্ন প্রশাসন কি তাহলে দোষীদের রক্ষার জন্য কাজ করছে??"
তিনি আরও বলেন, "আমি নতুন ভিসি প্রোভিসি স্যারের কাছে দাবি জানাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেয়। একই সাথে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানাই।"
স্বাধীনতা দিবস হলের সাধারণ শিক্ষার্থী ওবাইদুল ইসলাম দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি এবং অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে সিট দখলের রাজনীতি বন্ধ করে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন। একই সাথে অস্ত্র দিয়ে যারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলার চেষ্টা করতে চায় তাদের কঠোরভাবে দমন করার দাবি জানান।
তদন্ত কমিটি গঠন কেন করা হয়নি, এই প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, "উপাচার্য ও উপ-প্রচার্য না থাকায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। আগামী সপ্তাহে শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিং আছে, ওই সময় বিষয়টি উপস্থাপন করব, তারপর তদন্ত কমিটি হবে।"
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, "এটা তো আমি যোগদান করার আগের ঘটনা। এজন্য এ বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আপাতত নবীনবরণ নিয়ে ব্যস্ত আছি। হল প্রভোস্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এ রকম ঘটনা যেন না ঘটে।"
কেএ