নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল সদস্য আব্দুর রহিমকে ছাত্রদল থেকে অব্যহতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য আব্দুর রহিমকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ শুক্রবার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।
জানা যায়, হল প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ছাত্রদলের পরিচয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ, হলের সিট ছাড়তে চাপ প্রয়োগসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলের নেতা বনে যাওয়া আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে। বুধবার (৬ নভেম্বর) মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু হলের ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তলার একাধিক কক্ষে গিয়ে রহিমসহ ৫-৭ জন ছাত্রদলের কর্মী পরিচয়ে জোরপূর্বক শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে হয়রানি করেন। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ছাত্রদলের নেতা বনে যাওয়া আব্দুর রহিম এর আগে ২০১৬ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাব্বির-আপেল কমিটিতে কলা অনুষদের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পরে ২০১৭ সালে ছাত্রলীগের কমিটি পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টে যোগ দেন ছাত্রদলে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের তোষামোদি করে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান রহিম। পাঁচ আগস্টের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন প্রধানের অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন আব্দুর রহিম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ ধরনের কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হলে থাকা ছাত্রদের তথ্য এভাবে তালিকা করে রাখতো ছাত্রলীগ। কিন্তু ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর তা আবারও শুরু করে রহিমের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের একাংশ।
ছাত্রলীগ কায়দায় মানসিক নির্যাতন নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হাসান আকাশ বলেন, রাত ১২ টার পর আমার রুমে হঠাৎ করে ৮-১০ জন কোন অনুমতি ছাড়াই ঢুকে পরে। পরেরদিন আমার সেমিস্টার পরীক্ষা থাকায় আমি তাদের দিকে তেমন মনোযোগ না দিয়ে পড়তে থাকি। তারপর আমার বিভিন্ন তথ্যের জন্য জেরা করা শুরু করে। পরে আমার ম্যানার খারাপ এইসব বলে তাদের খাতায় নাম, বিভাগ লিখে পাশে স্টার চিহ্ন বসিয়ে দেয়।
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ বলেন, ছাত্রদলের রহিম ভাই ৪-৫ জন নিয়ে আমাদের রুমে এসে নাম লিস্ট করে। রুমের আরেক সিটের ফজলুল ভাই তখন ক্যাম্পাসে না থাকায় তাকেও কল করে। ফজলুল ভাইয়ের মাস্টার্সের একটা ইমপ্রুভ বাকি ছিলো তাই তার সিট ক্যান্সেল করে নি। কিন্তু তাও জোরপূর্বক সেই সিটে রহিম ভাই তার জুনিয়রকে উঠিয়ে দিয়ে যায়। এটা নিয়ে আমাদের মাঝে বাকবিতন্ডাও হয়।
এএজি