তীব্র তাপে গাছ থেকে মরে পড়ছে বানর
মেক্সিকোতে তীব্র তাপদাহে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে প্রাণ ও প্রকৃতি। আবহাওয়া এতটাই গরম হয়ে উঠেছে যে গাছ থেকে মরে নিচে পড়ছে বানর।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলে তীব্র তাপদাহের কারণে হাউলার নামে এক ধরনের বিরল বানর মারা যাচ্ছে। গত ৪ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত অন্তত ১৩৮টি বানর মারা গেছে।মারা যাওয়ার আগে প্রাণীগুলো খিঁচুনি, হাইপারথার্মিয়া ও অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে, যা ডিহাইড্রেশন তথা পানিশূন্যতার লক্ষণ। যেসব এলাকায় তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেশি, ওইসব জায়গায় এসব বানরের মৃত্যু হচ্ছে।
প্রাণ ও প্রকৃতির এমন বিপর্যয় ঠেকাতে কাজ শুরু করেছে কয়েকটি পরিবেশ রক্ষা সংগঠন। সংগঠনগুলো বলছে, হিট স্ট্রোকই এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে। তবে পরিবেশ অধিকারকর্মীরা অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলোও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত তাবাস্কো রাজ্য। সবচেয়ে বেশি বানর মারা গেছে এই রাজ্যে। অন্তত ৮৩টি হাউলার বানরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। আরও অনেকগুলো অসুস্থ বানরকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাঁচটি বানরকে স্থানীয় পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পশুচিকিৎসক ড. সার্জিও ভ্যালেনজুয়েলা বলেন, 'ওদেরকে গুরুতর অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। পানিশূন্যতা আর জ্বরে ভুগছিল ওরা। একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল বানরগুলো। হিটস্ট্রোক হয়েছিল ওদের।'
বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী গিলবার্তো পোজো জানান, প্রায় ৮৩টি বানর মৃত বা মুমূর্ষু অবস্থায় গাছের তলায় পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, 'আপেলের মতো টুপটাপ করে গাছ থেকে পড়ছিল ওড়া। তীব্র পানিশূন্যতায় ভুগছিল ওরা, কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা গেছে।'
তিনি বলেন, গরম আর পানিশূন্যতায় এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়া বানরগুলো কয়েক ডজন মিটার ওপরের ডালপালা থেকে মাটিতে পড়ার ধাক্কা সামলে উঠতে না পেরে মারা যায়। পোজো বলেন, তীব্র গরম, খরা, বনে দাবানল, খাবার পানির অভাবসহ বেশ কিছু কারণে বানরগুলো মারা যাচ্ছে।
মেক্সিকোর তাবাস্কোতে বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। মে মাস এখানে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি। তবে চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। ৪০ ডিগ্রি বা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
এমন উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি ভূমিরূপের ব্যাপক পরিবর্তন আরেক প্রধান কারণ হিসেবে হাজির হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত কৃষ ও বননিধনের ফলে ভূমিরূপ দ্রুত বদলেছে এবং তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। যার অবশ্যাসম্ভাবী ফল হিসেবে গরম হয়ে উঠছে পরিবেশ।
এএজি