আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল কেনিয়ার
ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থমূল্যের দুটি চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে কেনিয়া। মূলত বেশকিছু দিন ধরেই কেনিয়ায় ছাত্র–জনতা আদানির সঙ্গে সরকারের ‘গোপন’ চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। পরে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। জানা গেছে, এই চুক্তি বাতিলের পেছনে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর আগে বুধবার মার্কিন কৌঁসুলিরা গৌতম আদানি ও তার কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তবে এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ‘সম্ভাব্য সব আইনি ব্যবস্থা’ গ্রহণ করবে। কেনিয়া সরকার আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া যে দুটি চুক্তি বাতিল করেছে তা হলো, জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের চুক্তি।
জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রকল্পের চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর আওতায় একটি দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণ এবং বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনালের উন্নয়ন করার কথা ছিল।
চুক্তি বাতিলের বিষয়ে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বলেন, পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রুটোর এই ঘোষণায় পার্লামেন্টে উপস্থিত আইনপ্রণেতারা করতালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। চুক্তি বাতিলের বিষয়ে কেনিয়ার জনগণের মধ্যেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি বাতিলের এই ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট রুটো দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটালেন। তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য আদানি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গৌতম আদানি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ধনকুবের এবং তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলো এখন এসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে। কেনিয়া সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এসব আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রভাব বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এএজি