জবিতে ছাত্রলীগ নেতাদের নামে ‘গরুভোজ’
ছাত্রলীগ নেতাদের নামানুসারে গরুর নামকরণ করে গরুভোজের আয়োজন করতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৯ নভেম্বর) এই ভোজ আয়োজন হবে বলে জানান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই দিনে জুলাই-আগস্টোর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর ) গরুভোজের জন্য কেনা গরু ক্যাম্পাসে আনা হয়। পরে সেই গরু নিয়ে শ্লোগান দিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা।
দুপুর ১২ টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, গরুটি একটি লোহার খুঁটিতে বাঁধা রয়েছে। গরুর গায়ে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে "দামড়া মিরাজ "এবং " সাজবুল" লেখা পোস্টার। চার পাশে সেই গরুটির ছবি তুলছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী স্বাধীনতা উপলক্ষে এই গরুভোজের এ আয়োজন করছেন তারা। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী "মিরাজ হোসাইন" এবং "সাজবুল ইসলামকে" ব্যঙ্গ করেই গরুর গায়ে নামসম্বলিত পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন তারা।
এর মধ্যে সাজবুল ইসলাম ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ভিক্টোরিয়া পার্ক, সদরঘাট এলাকায় ছিনতাই চক্রের হোতা হিসেবে পরিচিত ছিল সাজবুল। এই চক্রের সদস্যরা রাত্রে যাতায়াত করা সদরঘাটগামী যাত্রী ও পথচারীদের সর্বস্ব লুট করতেন বলে জানা যায়। অপর শিক্ষার্থী মিরাজ হোসেন ছাত্রলীগের কোন পদে না থাকলেও জবি শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের মাইম্যান (ঘনিষ্ঠ) হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আকতারের নানা অপকর্মের সহযোগী হিসেবে ক্যাম্পাসে কুখ্যাতি ছিল তার।
এ বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাতুল ইসলাম জানান, মিরাজ ছিল ছাত্রলীগের অত্যাচারী নেতাদের মধ্যে একজন। সে আমাদের বিভাগে তার রাজত্ব কায়েম করেছিল। শিক্ষার্থীদের সাথে বাজে আচরণ করত সে এবং তার দোসররা। দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পর শিক্ষার্থীরা একটি ইতর প্রাণীর সাথে তার নাম সংযুক্ত করে প্রতিবাদ এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। মূলত দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের প্রতি জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ এটি।
একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুজ্জাহের মেহেদী বলেন, সাজবুল শুধু আমাদের বিভাগে নয়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা। সে আমাদের ওপর ব্যাপক জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের জীবনটাকে বিষময় করে তুলেছে। স্বাধীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আমরা তাই তার বিরুদ্ধে এভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নিজেদের আনন্দ আমরা প্রকাশ করছি।
এএজি