মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল না জামায়াত: জামায়াতে আমীর
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না জামায়াতে ইসলামী। তবে ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুফল না পাওয়ার শঙ্কা ছিল দলটির। জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এমন দাবি করেছেন। অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, সেটি জনগণই নির্ধারণ করবে বলে জানান জামায়াতের আমীর।
৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর অনেকটা মধুর সময় পার করছে জামায়াত। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আসা দলটির রাজনৈতিক উত্থান-পতনের আদ্যোপান্ত জানতে জামায়াত আমীরের মুখোমুখি হয় । এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, রাজনীতির রীতিনীতিতে নিষিদ্ধের খেলার বিষয়টি?
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় যায় তখন নিষিদ্ধের ঘোর তাদের পেয়ে বসে। নিষিদ্ধের রাজনীতি আমাদের সমর্থনের বিষয় না। এটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিষয়।
সম্প্রতি বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বক্তব্যে দল দুটির মধ্যে দূরত্বের বিষয়টি সামনে আসলেও তা মানতে নারাজ জামায়াতের আমীর।
জামায়াতে আমীর বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার করা সব সংস্কার নয়। কিছু সংস্কার করবে অন্তর্বর্তী সরকার আর কিছু সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার। আমরা মনে করি নৈতিক দায়বদ্ধতা আছে বর্তমান সরকারের। তারা তাড়াহুড়া নেই বলে এই বিষয়টি টেনে লম্বা যেনো না করে এই কথা আমরা বারবার বলেছি।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকার ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দেন জামায়াত আমীর।
তিনি বলেন, আমার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, ভারতের সহযোগিতায় যদি দেশ স্বাধীন হয় তাহলে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া যাবে না। এরপরেও এটা সঠিক যে- জামায়াত চেয়েছিল এক পাকিস্তান। কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাদের নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন এবং বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের কারণে সারা জাতি ফুসে উঠেছিল, মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। সেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশকে আমরা আমাদের কলিজা দিয়ে ভালোবেসে কবুল করে নিয়েছি।
জামায়াতে আমীর আরও বলেন, তখনকার সময়ে আমাদের চিন্তা বিজয়ী হয়নি, সেই সময় আমাদের চিন্তা পরাজিত হয়েছে, আমাদের সিদ্ধান্ত পরাজিত হয়েছে। এখান জনগণ মূল্যায়ন করবে আমাদের সেই ভূমিকা কতটা যথার্থ ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার থেকে জামায়াত বেশি সুবিধা পাচ্ছে এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেন ডাক্তার শফিকুর রহমান। তবে সংস্কারের জন্য দিতে চান যৌক্তিক সময়।
এএজি