দূষণ কমাতে সরকারের বৈদ্যুতিক যান বৃদ্ধির পরিকল্পনা
বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণ একটি গুরুতর সমস্যা। পরিবহনের ক্ষেত্রে জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণের একটি বড় অংশ তৈরি হয়।দূষণ কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্যে একটি হল বৈদ্যুতিক যান চালুর পরিকল্পনা।
বৈদ্যুতিক যান হল এমন যানবাহন যা বৈদ্যুতিক শক্তিতে চালিত হয়। এগুলো জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণ করে না। এছাড়াও, বৈদ্যুতিক যান জ্বালানি খরচ কমায় এবং শব্দদূষণ কমায়।
বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১০ লাখ বৈদ্যুতিক যান চালু করার পরিকল্পনা করেছে। এজন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এর মধ্যে রয়েছে:
জ্বালানিসাশ্রয়ী অর্থনীতি ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক প্রবণতার অনুসরণে বাংলাদেশেও বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এক্ষেত্রে, নীতিগত সমর্থন ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের যৌথ প্রচেষ্টা প্রাধান্য পাচ্ছে।
ইতোমধ্যেই নিজস্ব বহরের জন্য ৫০টি ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক বাস সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন কোম্পানি বিআরটিসি। অন্যদিকে, বৈশ্বিক গাড়ি প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশেই ইলেকট্রিক যান প্রস্তুত বা সংযোজনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে দুটি বেসরকারি অটোমোবাইল কোম্পানি।
জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থাও (ইউএনডিপি) রাজধানী ঢাকায় চার চাকার বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত যানের প্রসার বাড়াতে চার্জিং স্টেশনের মতো দরকারি অবকাঠামো স্থাপনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
২০২১ এর জুন মাসে মন্ত্রিপরিষদের সবুজ সংকেত পাওয়া অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতি-২০২১-এর আওতায় এ খাতের বিকাশে কর অবকাশ ও বার্ষিক প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুবিধাগুলো পাবে, স্থানীয়ভাবে ইলেকট্রিক যান সংযোজক, জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে জড়িত প্রতিষ্ঠান।
প্রস্তাবিত নীতির আওতায় ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে পরিবেশ বান্ধব নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা ১৫ শতাংশ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়।
দেশে চাহিদার তুলনায় এখন বেশি বিদ্যুৎ উপাদন হওয়ার কথা উল্লেখ করে, (২০২১সালের ১২ সেপ্টেম্বর) নতুন কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনকালে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আশাপ্রকাশ করেছিলেন, যার আওতায় বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলগাড়ি, বাস ও কার। ইতিমধ্যে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশের প্রথম বাণিজ্যিক ইলেকট্রনিক গাড়ি চার্জিং স্টেশন (৩ ডিসেম্বর ২০২৩) যাত্রা শুরু করেছে।
তবে বিদ্যুৎচালিত গণ-পরিবহন প্রতিষ্ঠায় প্রধান বাধা, অধিক শুল্ক ও চার্জিং স্টেশনের অভাব। আমদানি শুল্ক অনেক বেশি হওয়ায়, চার চাকার বৈদ্যুতিক যানের দাম বাংলাদেশের বাজারে অনেক বেশি হয়ে যায়। এ ধরনের যানের বেসরকারি অপারেটর ও ইউএনডিপি সূত্র এসব সমস্যার কথা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি ইভি'র (বৈদ্যুতিক যান) প্রসারের জন্য দরকারি নীতিগত কাঠামো দৃঢ়করণ, চার্জিং স্টেশন স্থাপন ও উপযোগী সক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যে ১ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দানের প্রস্তাবকালে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে জানায়, দেশের যোগাযোগ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে, এগুলো দূর করতে হবে।
সড়ক, পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ '২০২৬ সালের মধ্যে জ্বালানি ভিত্তিক পরিবহন কাঠামোকে বৈদ্যুতিক যানবাহন গ্রহণে উপযোগীকরণ' শীর্ষক ইউএনডিপি সমর্থিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এব্যাপারে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ—ইআরডি'র যুগ্ম-সচিব অমল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, 'ইভি পরিবহন সম্প্রসারণে ইউএনডিপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছে। এরপর তারা প্রকল্প প্রস্তাবনার খসরা নথি তৈরি করছে। এখন এ প্রকল্পটি অনুমোদন পর্যায়ে আছে। প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তবে তার আগে ইউএনডিপির সঙ্গে সরকারের একটি অনুদান চুক্তি সই হবে।'
ইভি যুগে প্রবেশের পদক্ষেপ
রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন কোম্পানি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গণপরিবহন ব্যবস্থায় ই-বাস চালুর উদ্যোগ নিয়ে এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
কার্বন নিঃসরণ কমাতে সরকারের সর্বপ্রথম উদ্যোগের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো দূরপাল্লার রুটে পরিচালনার জন্য ৫০টি বাস কেনার পরিকল্পনা করছে বিআরটিসি। এজন্য তহবিল সংগ্রহের আলোচনা চলছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, দক্ষিণ কোরিয়া সরকারসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে।
এসব বাসের প্রতিটিতে থাকবে ৫০টি আসন। ব্যাটারি রিচার্জের ব্যবস্থা হবে দুটি—যাত্রাপথে এবং রাত্রে বাস ডিপোতে অবস্থানকালে।
এব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন—বিআরটিসি'র ডিজিএম (পরিকল্পনা) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ইভি চালু করা সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে। এর অংশ হিসেবে ৫০টি ইভি কেনার জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা অর্থায়ন করবে, তারা নিজেদের সমীক্ষার মাধ্যমে অর্থায়নের সিন্ধান্ত নেবে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর্, এসব বাস কবে কেনা হবে, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। আর যদি সরকারি অর্থায়নে কেনা হয়, সেক্ষেত্রে সরকারি কোনো সংস্থার আওতায় সমীক্ষা হবে।
তিনি বলেন, 'ইভি বাস কেনার এ প্রকল্পে সমীক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে কিনা, তা জানতে হবে। আবার চার্জিং স্টেশন স্থাপন, রেজিস্ট্রেশন কীভাবে হবে, সেসব বিষয়ও সমীক্ষায় থাকতে হবে। সবকিছু বিবেচনায় যদি এটি সরকারের জন্য লাভজনক হয়, তবেই সমীক্ষার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থারও ইভি গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ (বেইল) নামের একটি স্থানীয় অটোমোবাইল কোম্পানি এব্যাপারে টয়োটার সঙ্গে কাজ করছে, তারা প্রাথমিকভাবে ২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে দেশে বৈদ্যুতিক যানবাহন উৎপাদনে করতে চায়।
লিথিয়াম ব্যাটারি, মোটর, কন্ট্রোলার, সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম, চেসিস ও বডিসহ ইভি যানের ৬০ শতাংশই দেশে উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে কোম্পানিটির।
তাদের উৎপাদিত ইভি কার দেশের বাজারে বিক্রি হবে ১২-১৫ লাখ টাকায়। কারের ব্যাটারি সক্ষমতা হবে পারে ৫০ কিলোওয়াট আওয়ার, যা একবার চার্জে ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারবে।
বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ (বেইল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মাসুদ কবির বলেন, আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, শুল্কায়নে যেন শিল্পায়ন হয়। আমরা চাই ইভির ক্ষেত্রে শুল্কায়ন বলবৎ থাকুক। এতে দেশীয় শিল্প সম্প্রসারণ হবে। আমাদের দেশে ১৭ কোটি মানুষের বড় বাজার রয়েছে। সারা বিশ্ব গাড়ির ক্ষেত্রে এখন ট্রান্সফরমেশনের দিকে যাচ্ছে। পৃথিবীতে এখন এক বিলিয়ন গাড়ি আছে। এসব গাড়ি আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ইভিতে রূপান্তর হবে। বাংলাদেশ যদি এ সুযোগ দিতে পারে, তবে আমাদের জন্য বড় অর্জন হবে। সে কারণে শুল্কায়ন বান্ধব হওয়ার চেয়ে, শিল্পায়ন বান্ধব হলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের অনেক উপকার হবে।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প পার্কে তারা যে ইভি গাড়ি তৈরির কারখানা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন, সেখানে প্রথমত চার চাকা, তিন চাকা এবং দুই চাকার গাড়ি উপাদন করবেন। আগাম বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে এ কারখানার গাড়ি বাজারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কারখানায় বছরে ২৫ হাজার চার চাকার গাড়ি, ৫০ হাজার তিন চাকার গাড়ি এবং এক লাখ মোটরবাইক তৈরি করা হবে। তবে বাস এবং ট্রাক প্রথম অবস্থায় তারা বানাবেন না। পরে পর্যায়ক্রমে বাস-ট্রাকও উৎপাদন হবে। বাস ও ট্রাক উৎপাদনে এখনই তাদের জন্য প্রতিযোগীতা যাওয়া কঠিন হবে, বলে মন্তব্য করেন মাসুদ কবির।
তিনি বলেন, 'বাসের জন্য বড় ব্যাটারির প্রয়োজন হয়। এ কারণে চার্জিং স্টেশন একটু আলাদা হবে। তবে বা অন্যান্য চারচক্র যানে (কার, বাইক, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক) ব্যাটারি তুলনামূলক ছোট হওয়ায় চার্জিং প্রক্রিয়া অনেক সহজ। ফলে ইভির সম্ভাবনাও ব্যাপক।'
বেইল এমডি আরও বলেন, 'ইভি থেকে কোনো কার্বন নির্গত হয় না। এর মাধ্যমে, আগামী প্রজন্মের জন্য পরিবেশ বান্ধব গাড়ি নিশ্চিত করতে হবে। ক্রেতাদের ইভি গাড়ি কিনতে উৎসাহ দিতে রেজিস্ট্রেশন ফি ও রুট পারমিট কস্টে ছাড় দেওয়া দরকার। বিশেষ করে, দেশে যারা গাড়ি তৈরি করবে, তাদের জন্যও রে রেজিস্ট্রেশন ফি মওকুফ করা উচিত।'
স্থানীয়ভাবে বার্ষিক ২০ হাজার ইভি উৎপাদনে সাড়ে ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে নিটোল মটরস। তাদের উৎপাদিত মডেলের নাম সুভারে, যার দাম হবে ১০-১২ লাখ টাকা। যা বাজারে প্রচলিত জ্বালানির সেডান গাড়ির সমতুল্য। এতে থাকবে ২৫ কিলোওয়াট ব্যাটারি, যাতে একবার চার্জে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবে গাড়িটি।
ইউএনডিপি'র নথিতে যুক্ত হিসাব অনুসারে, বর্তমান দরে গাড়িটি একবার চার্জ করাতে ১৭০ টাকা খরচ হবে।
ইভি কমায় জ্বালানি খরচ ও দূষণ
এ বছরের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল জায়ান্ট জেনারেল মোটরস ঘোষণা দিয়েছে, তারা ২০৩৫ সালের মধ্যে পেট্রল ও ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রি বন্ধ করবে। আরেকটি বড় কোম্পানি অডি ২০৩৩ সালের মধ্যে পেট্রল ও ডিজেলচালিত মোটরগাড়ি উৎপাদন বন্ধের পরিকল্পনা করছে। আরও অনেক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এ রকম রোডম্যাপ হাতে নিয়েছে। কাজেই বলা যায়, আর দু-তিন দশকের মধ্যেই বিশ্বে পেট্রল ও ডিজেলচালিত মোটরগাড়ি অতীত হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে অকল্পনীয় দ্রুতগতিতে। ২০৩৫ সালের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে অর্ধেক যাত্রীবাহী গাড়ি বিদ্যুৎচালিত হয়ে যাবে।
বিশ্বজুড়ে এ রূপান্তরের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে; প্রচলিত জ্বালানির বাহনের চাইতে ইভি জ্বালানি সাশ্রয়ী। তাদের টেইলপাইপে কার্বন নিঃসরণ একেবারেই শূন্য।
২০২০ সালে বাজারে আসা টয়োটা-করোলার একটি হাইব্রিড কার প্রতি লিটার জ্বালানি ৫২ মাইল পাড়ি দিতে পারে, সে তুলনায় একইবছর বাজারে আসা প্রচলিত চার সিলিন্ডারের অটোমেটিক অটোমেটিক করলার লিটার প্রতি মাইলেজ মাত্র ৩৪।
তবে ১৯৯০ এর দশকের তুলনায় কমলেও বাজার আরও প্রসারে এখনও মূল সমস্যা ব্যাটারির দাম। একারণে ব্যাটারি রিসাইকেল করে এতে ব্যবহৃত মূল্যবান ধাতু পুনর্ব্যবহারের প্রযুক্তি ও উপায় সন্ধানে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলোকে।
বাধা দূর হয়নি:
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক গতি এলেও দেশে চার চাকার বৈদ্যুতিক যানের বাজার বলতে গেলে একেবারেই অস্তিত্বহীন। কেউ কেউ অবশ্য অনেক টাকা দামে কিছু হাইব্রিড গাড়ি আমদানি করেছেন। এগুলোর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ প্ল্যাগ অন হাইব্রিড। দেশে বাণিজ্যিক পর্যায়ে কোন চার্জিং স্টেশন না থাকায়, যাদের অধিকাংশই ব্যবহারকারীরা বাড়িতে চার্জ করান।
ইউএনডিপি'র হিসাব অনুসারে, এক হাজার প্লাগ-ইন হাইব্রিড কারসহ বর্তমানে দেশে ১৫ লাখ ইভি মোটরবাইক ও অনিবন্ধিত তিন চাকার যান রয়েছে।
ইউএনডিপি'র প্রকল্পের খসরা নথি অনুসারে জানা যায়, গণ-পরিবহন ব্যবস্থায় ইভি যুক্তকরণ ও বেসরকারি খাতে ইভি উৎসাহিত করতে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যান্ডেটে কোনো সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই।
বৈদ্যুতিক যানের ব্যাপারে সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়হীনতাই এক্ষেত্রে প্রধান বাধা, যা সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও নতুন বাজারটির নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সমস্যার জন্ম দিচ্ছে।
দেশে ইভি গ্রহণের খরচ-সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের দাম নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এছাড়া, ইলেকট্রিক কারের সম্ভাব্য ক্রেতাদের আর যেসব সমস্যা অনুৎসাহিত করতে পারে, তাঁর মধ্যে রয়েছে চার্জিং স্টেশনের অভাব, ব্যাটারি লাইফ নিয়ে উদ্বেগ, গাড়ির দাম ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও আইনের অনুপস্থিতি।
ইউএনডিপি বলছে, চার্জিং অবকাঠামো সৃষ্টি ও সৌরশক্তি-হাইব্রিড চার্জিং অবকাঠামো নির্মাণ এবং বৈদ্যুতিক রিচার্জের জন্য সুনির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করাটাও বেশ চ্যালেঞ্জপূর্ণ হবে।
'তবে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানি কম। ভবিষ্যতে যদি আমদানি বাড়ে, সেক্ষেত্রে শুল্ক কমানোর বিষয়টি চিন্তা করা যেতে পারে,' যোগ করেন তিনি। ( তথ্য সংকলন ২০২১ এর প্রতিবেদন থেকে নতুন সংস্করণ)
এমআইপি