Deshdeshantor24com: Bangla news portal

ঢাকা শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

বেরোবির শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপন

বেরোবির শিক্ষার্থীদের ঈদ উদযাপন
গ্রাফিকস দেশ দেশান্তর ২৪.কম

"ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” দীর্ঘ এক বছর পর আবারও আমাদের মাঝে এসেছিল রমজানের ঈদ। ব্যস্তময় শহর ছেড়ে শিক্ষার্থীরা যখন ঈদ উদযাপনে নিজ বাড়িতে পারি জমায় তখন তাদের ঈদের আনন্দ যেন বহু গুণে বেড়ে যায়। ঈদ উদযাপন নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী তাদের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরেছেন দেশ দেশান্তর ২৪ এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ঐশী।

খাদেমুল সরদার

দ্বিতীয় বর্ষ, গণিত বিভাগ।

ঈদ আসতেছে মানেই বেশ কয়েকদিনের লম্বা একটা ছুটি। সারা বছরের ক্লাস, পরীক্ষার চাপে মাঝে মাঝে নিজেকেই ভুলে যাই। নিজেকেও যে একটু সময় দেওয়া দরকার, সেই সময় টুকুও যেনো পাওয়া যায় না। সবসময় একরম চাপে থাকতে হয়। পছন্দের জায়গা গুলোতে ঘুরতে যাওয়া কিংবা পছন্দের কাজ গুলোতে আলাদা করে একটু সময় দেওয়া তো অনেকটা বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো। সেইজন্য ঈদের ছুটি আমার কাছে আলাদা রকমের একটা প্রশান্তি দেয়। কারণ এই সময়ে আমি নিজেকে সময় দিতে পারি। নিজের যা ভালো লাগে তাই করতে পারি, যেমন: ছবি আঁকা, আবৃত্তি করা, পছন্দের জায়গাগুলোতে ঘুরাঘুরি। পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে যাওয়া তো আছেই। স্কুলের ছেলেবেলার বন্ধুগুলো, যাদের সাথে জীবনের সেরা সময়টা কেটেছে, তাদের সাথে দেখা করা, একটু সময় কাটানোর জন্য এই ঈদের সময়টাই মোক্ষম সময়। কারণ অন্যান্য সময় কাউকেই সেভাবে পাওয়া যায়না। সেইসাথে ঘুম কাতুরে মানুষ হিসেবে একটু নিশ্চিন্তে ঘুমানোর জন্য ঈদের ছুটি আমার কাছে একটু বেশিই ভালো লাগে। কারণ অন্যান্য সময় ঘুম থেকে উঠে চোখ মুছতে মুছতে ক্লাসের জন্য দৌড়াতে হয়। সব মিলিয়ে প্রত্যেকবার এর মতো এবারের ঈদ ও খুব ভালোভাবেই কেটেছে।

সাদিয়া তাহসীন

দ্বিতীয় বর্ষ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ।

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। মুসলিম ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদ। ঈদ উদযাপনের বিষয়টা উদযাপনের আমেজটা আমার কাছে বয়সের সাথে সাথে অনেকটা পরিবর্তনশীল বলে মনে হয়। ছোটবেলায় ঈদ মানেই মনে হতো নতুন জামা পড়া, মেহেদী দেয়া,সালাম করে সালামি নেয়া,সব ভাই বোন মিলে খেলাধুলা করা।বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর মানেটাও অনেকাটাই বদলে গেলো আমার কাছে।এখন ঈদ উদযাপন মানে আমার কাছে ক্যাম্পাসের একটা লম্বা ছুটি। এই কর্মব্যস্ত জীবন থেকে একটু বিরতি। অনেকগুলো দিন পর নিজ বাড়ি ফেরা,আপনজনদের সাথে দেখা হওয়া, তাদের সাথে অনেকটা বেশি সময় কাটানো। এখন ঈদ মানে আমার কাছে মনে হয় নিজ বাড়িতে আপনজনদের সাথে বসে অনেকটা সময় গল্প করা, মায়ের হাতে রান্না খাওয়া, পুরনো বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে একটু ঘোরাঘুরি একটু আড্ডা দেয়া,পুরনো স্মৃতিচারণ করা। যে ছোটবেলায় ঈদের সবথেকে বড় আনন্দ ছিল নতুন জামা পড়ায়এখন ঈদের বড় আনন্দ অনেক দিন পর বাড়ি ফেরায়।

কামরুল হাসান কাব্য

দ্বিতীয় বর্ষ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ।

ঈদ আসে আনন্দের ভীড় নিয়ে। আর সেটা যদি হয় সবার সাথে ভাগাভাগি করার তাহলে যেন আনন্দের পরিধি আকাশ ছোঁয়া। ঈদ কাটাতে ক্যাম্পাস ছেড়ে যখন বাড়ির দিকে গন্তব্য, ঈদ যেন তখনই শুরু। নিজের এলাকায় ফেরা আর সেটা উপলক্ষ যখন ঈদ, যেন হাজার কোটি ঈদের সমাগম। ঈদকে আরও প্রাঞ্জল্য করতে সবার সাথে ভাগাভাগি করার সুযোগ হয়েছিল বরাবরের মতো এবারও। "মেধাবী কল্যাণ সংস্থা" নামের সংগঠনের সাথে অনেক আগের পথচলা এবং প্রচার সম্পাদক হিসেবে আছি।সেই সুবাদে, প্রতিবারের ন্যায় এবার গরীব, খেটে খাওয়া মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা হয়েছিল।সেটাতে যেন ঈদের মূল সুখটা পাওয়া। ঘোরাঘুরি ছিল ঈদের আনন্দের অন্য পৃষ্ঠায়। কমতি ছিল না রেডিও স্টেশন (রেডিও চিলমারী), ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের ইফতার আর নৌকা ভ্রমণ। শুকনো ব্রহ্মপুত্রও যেন রুপের কমতি রাখেনি। সব মিলে ঈদের আনন্দ বেশ ছিল। ঈদ যেমন সুখ, আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে,তেমনি করে প্রত্যেকের সাথে প্রত্যকের মেলবন্ধনটাকে আরেকটু দৃঢ় করার সুযোগ করে দেয়। অন্যের মুখের হাসি ঈদের থেকে কম নয়। তাই ঈদ কাটুক সবার সাথে, সমান ভাবে।

কায়েম উদ্দিন

দ্বিতীয় বর্ষ, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ।

"ঈদ অভিজ্ঞতা "

ঈদ মানেই আনন্দ। আর সেই ঈদ যদি কাটে পরিবার-পরিজন,আত্নীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবদের সাথে নিয়ে,তাহলে সেই ঈদ এর আনন্দ বেড়ে যায় আরো বহুগুণে। বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ার সুবাধে আমার থাকা হয় উত্তরবঙ্গে। পড়াশোনা করছি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর এ।ঈদের ছুটির আগে আগে ক্যাম্পাসে থাকাকালে, শুধুই অপেক্ষায় থাকতাম যে, " ইস,কখন যে ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার তারিখটি ঘনিয়ে আসবে! "অবশেষে, ক্যাম্পাসও ছুটি ঘোষণা হলো। এবার যাত্রা দক্ষিণবঙ্গে,প্রিয়জনদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ও একসাথে সুন্দর সময় কাটানোর উদ্দেশ্য।অবশেষে,দীর্ঘ ১৫ ঘন্টা বাসে চেপে চিরচেনা নীড়ে পৌছালাম। মা-বাবার সাথেও দীর্ঘ ৩-৪ মাস পরে দেখা মিললো। 

আমার মনে হয় সুন্দর সময়গুলো খুব দ্রুতই চলে যায়।অবশেষে, ঈদ চলে এলো।সকাল বেলা খুব ভোরে উঠে বড় ভাই ও ছোট বোনের সাথে ঘর গুছানো, রান্নাবান্না সহ আরো বিভিন্ন কাজে মা-কে সাহায্য করি।তারপর ফ্রেশ হয়ে বাবা ও ভাইদের সাথে ঈদগাহ এর উদ্দেশ্য রওনা হলাম।ঈদের নামাজ শেষে খুব মন উজাড় করে যাকেই সামনে পায় তাঁকেই বুকে জড়িয়ে নিয়ে "ঈদ মোবারক " বলে সম্বোধন ও কুশলাদি বিনিময় করা শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।

বাসায় গিয়ে চাচাতো ভাই-বোনদের সাথে একসাথে হাসি-খুশিতে ঈদের খাওয়া দাওয়া শেষ করতে করতে প্লান করে ফেলি যে, আজকের দিনে সবাই মিলে কোথায়, কাদের বাসায় যাওয়া যায়।প্লান মতো সব ট্যুর শেষ করে ফেললাম।আর মজার বিষয় হলো দিনশেষে হিসাব করে দেখলাম আমার হাতে ঈদ সালামি বাবদ প্রায় ১০০০০ টাকা।সেই খুশিতে ঈদের খুশি যেন বেড়ে গেলো আরো বহুগুণে।

দিনশেষে,বরাবরের মতোই ছুটিশেষে আবারো ক্যাম্পাসে ফিরতে হবে এই ভেবে মনে দুঃখ এসে জড়ো হলো। দীর্ঘক্ষণ মনের সাথে স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর সিদ্ধান্ত নিলাম যে, "সুখের পরে দুঃখ, দুঃখের পরেই সুখ। বেলা শেষে, এতো এতো কাটানো মধুর স্মৃতি মাথায় নিয়ে জীবন গড়া ও দেশ ও দশের সেবা করার লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে আবারো ফিরতে হল প্রিয় ভার্সিটি ক্যাম্পাসে।

আনিকা তাসকিন

প্রথম বর্ষ, জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ।

ঈদ মানেই আনন্দ। আর পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের ব্যাপারই আলাদা। এবারের ঈদ প্রতিবারের মতো হলেও আমার কাছে একটু আলাদা। কারণ অনেকদিন পর বাড়ি আসা। আবার সেটা ২২ শে রমজানে। এতদিন প্রতিটি মুহূর্ত দিন গুনে গুনেই সময় পার করেছি যে কবে বাড়ি যাব। এবারের ঈদের আনন্দ একটু বেশিই। বাড়িতে আসার পর রীতিমতো ভালোবাসার অত্যাচারের মধ্য দিয়ে গেছি, পরিবারের সকলেই আমার মতোই খুশি হয়েছেন তাদের সাথে আগে যোগ দিতে পেরেছি বলে। 

আমি খুবই আনন্দিত। নতুন পোশাক পরা, সবার সাথে প্রিয় খাবারগুলো খাওয়া, পরিবারের সাথে আনন্দ করা প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। রমজান মাসে রোজা রাখার পর এটি একটি আনন্দময় দিন। সবমিলিয়ে এইবারের ঈদের আমেজই আলাদা,ভিন্ন। 

 
কেএ

নামাজের সময়সূচী

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
Masjid
ফজর ৪:৪১
জোহর ১২:০৭
আসর ৪:২৯
মাগরিব ৬:১৪
ইশা ৭:২৮
সূর্যোদয় ৫:৫৬
সূর্যাস্ত ৬:১৪