ফিরে আসলেই সৌখিনতা
গ্রামের জীবনযাত্রাকে অত্যাধুনিক করার জন্য এবং মানুষের জীবনকে আরামদায়ক বানাবার জন্যেই শহরের সৃষ্টি হল। কুঁড়েঘর ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরি হল, চাষের জমিতে কারখানা তৈরি হল, গাছ কেটে চওড়া রাস্তা বানানো হল। কিন্তু এখন যেকোনো শহরবাসীকে জিজ্ঞেস করুন তার শহর পছন্দ নাকি গ্রাম। বেশিরভাগই উত্তর দেবে, 'গ্রাম'। প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া এখন লাক্সারি। পাহাড়ে-জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়া এখন খরচা সাপেক্ষ। অথচ জঙ্গল কেটেই আমাদের এই নগরের সৃষ্টি, কারণ আমরা জঙ্গলের বদলে নগর চেয়েছিলাম।
ভাত যাতে গরমে নষ্ট না হয়, তাই একসময় পানি ঢেলে রাখা হত। সেটাই পরের দিন সকালে পান্তা ভাতে পরিণত হত। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য ফ্রিজ আবিষ্কার হল। এখন মানুষ বেশি টাকা দিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পান্তা ভাত কিনে খায়, ফেসবুকে পান্তা নিয়ে আদিখ্যেতা করে।
প্লেট সহজলভ্য ছিলো না বলে মানুষ একসময় কলাপাতা কেটে তাতে খাবার খেত। এখন সবার বাড়িতে প্লেট, কিন্তু নামী রেস্তোরাঁয় কিংবা কখনো বাড়িতেও কলাপাতায় খাবার সুযোগ পেলে মানুষ সেটাকে লাক্সারি মনে করে।
লুঙ্গি-পাঞ্জাবি কিংবা শাড়ি পরাটাই একসময় চল ছিল। ঘরে-বাইরে প্রতিটা জায়গায় ওগুলোই ছিল স্বাভাবিক পোশাক। ওগুলো পরার ঝামেলা বলেই পরবর্তীকালে প্যান্ট-শার্ট মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হল। এখনকার ছেলেমেয়েরা ধুতি কিংবা শাড়ি পরে ভীষণ স্পেশাল অকেশনে কিংবা উৎসবের সময়।
এগুলো থেকে স্পষ্ট যে কিছু জিনিস বারেবারে ফিরে আসে ঠিকি কিন্তু স্থায়িত্বের জন্য না। ফিরলেও ফিরে কিছু সময়ের সৌখিনতা হয়ে।
কেএ