Deshdeshantor24com: Bangla news portal

ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

নারী-পুরুষ মনোবিজ্ঞান:

বিবাহ পূর্ব প্রস্তুতি ও সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি

বিবাহ পূর্ব প্রস্তুতি ও সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি
সংগৃহীত ছবি

নারী-পুরুষের সাইকোলজি অংশটি আমার কাছে বিশেষভাবে কৌতূহল কাজ করে। কারণ এতে মানবদেহের রহস্যের খেলা রয়েছে যা নারী-পুরুষের সম্পূর্ণ আলাদা। 

বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে নারী-পুরুষের মনোবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা চলছেই । এরই মধ্যে কিছু তথ্য লক্ষ্য করার মত বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে বস্তু-ভিত্তিক কাজ বা দক্ষতা (object-oriented jobs or skills) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে মানবমুখী চাকরি বা দক্ষতা (Human-oriented jobs or skills) এই শব্দ দুটির মধ্যে থেকে নারী পুরুষের বৈশিষ্ট্যের যে তারতম্য তা অবাক করার মত।

কারণ, বিবাহ পূর্ব প্রস্তুতি, সুখী দাম্পত্য জীবনযাপন, এবং পারিবারিক সম্পর্কের উন্নয়নে একে অন্যকে বুঝতে হলে অবশ্যই নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়টি সকলকে জানা উচিত বিশেষ করে বিবাহ করার পূর্বেই।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত  পুরুষের আগ্রহ এবং চিন্তাভাবনার জগত জটিল এবং বহুমুখী। জীববিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার এক জটিল মিশ্রণ তাদের মনোভাবকে আকার দেয়। এই প্রশ্নটিতে আমরা পুরুষের আগ্রহের কয়েকটি মূল বিষয় অন্বেষণ করব, যার মধ্যে রয়েছে:

জিনিস নিয়ে খেলা (Play with things): পুরুষদের প্রায়শই বস্তু এবং সিস্টেমগুলির সাথে কাজ করতে আগ্রহী দেখা যায়। এটি তাদের মধ্যে বিশ্বকে বোঝার এবং নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

আধিপত্য এবং শীর্ষে পৌঁছানো (Dominance and reaching the top): অনেক পুরুষ প্রতিযোগিতামূলক এবং লক্ষ্যমুখী হয়। তারা কর্মক্ষেত্রে বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।

আমার কাজ কি হতে হবে (What is my work to be): পুরুষদের তাদের জীবনে অর্থ এবং উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে চায়। তারা এমন কাজ খুঁজতে পারে যা তাদের দক্ষতা এবং প্রতিভা ব্যবহার করতে দেয় এবং তাদের সমাজে অবদান রাখতে দেয়।

পেশাগত লক্ষ্য (Occupational aim): পুরুষদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারকে ভালোভাবে ভরণপোষণ করার জন্য একটি স্থিতিশীল পেশা গড়ে তোলার ইচ্ছা থাকে।

আমি মানুষ সম্পর্কে কি চিন্তা করি (What I think about people): পুরুষদের প্রায়শই সামাজিক মর্যাদা এবং অন্যদের দ্বারা সম্মানিত হওয়ার গুরুত্বের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়। তারা বন্ধুত্ব এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যও আগ্রহী হতে পারে।

বস্তু-ভিত্তিক কাজ বা দক্ষতা (Object-oriented jobs or skills): পুরুষদের প্রায়শই হাত দিয়ে কাজ করার এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতার প্রতি আকর্ষণ থাকে। তারা প্রযুক্তি, সরঞ্জাম এবং যন্ত্রপাতিতে আগ্রহী হতে পারে।

এবার জেনে নেই মেয়েদের আগ্রহ ও চিন্তা-ভাবনা: মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ

মেয়েদের আগ্রহ ও চিন্তা-ভাবনা জটিল এবং বৈচিত্র্যময়, যা ব্যক্তি, সংস্কৃতি, সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং জীবনের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। তবে, কিছু সাধারণ থিম মনস্তাত্ত্বিক গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে দেখা যায়।

মানুষের সাথে যোগাযোগ: মেয়েরা প্রায়শই সামাজিক সংযোগ এবং সম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দেয়। তারা বন্ধুত্ব, পরিবার এবং রোমান্টিক সম্পর্কের মাধ্যমে অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপন এবং ঘনিষ্ঠতা অনুভব করতে আগ্রহী।

জনপ্রিয়তা: কিছু মেয়ে জনপ্রিয়তা এবং সামাজিক মর্যাদা অর্জনে আগ্রহী হতে পারে। এটি সহকর্মী, বন্ধু বা সমাজের বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে অনুমোদন এবং গ্রহণযোগ্যতার ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

ভবিষ্যতের সঙ্গী: অনেক মেয়ে তাদের ভবিষ্যতের সঙ্গী সম্পর্কে চিন্তা করে এবং তাদের কেমন ধরনের সম্পর্ক চায় তা কল্পনা করে। এটি রোমান্টিক প্রেম, বিবাহ এবং পারিবারিক জীবনের প্রতি আকাঙ্ক্ষার সাথে যুক্ত হতে পারে।

সামাজিক লক্ষ্য: মেয়েরা বিভিন্ন সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে আগ্রহী হতে পারে, যেমন শিক্ষাগত সাফল্য, পেশাগত অগ্রগতি বা সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করা। এই লক্ষ্যগুলি তাদের ব্যক্তিগত মূল্যবোধ, আগ্রহ এবং বিশ্বাসের সাথে প্রতিফলিত হতে পারে।

অন্যদের ধারণা: মেয়েরা প্রায়শই অন্যরা তাদের সম্পর্কে কী ভাবছে সে সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং ইতিবাচক চিত্র তৈরি করতে চায়। এটি সামাজিক মীমাংসা, আত্ম-প্রতিনিধিত্ব এবং সামাজিক নিয়ম মেনে চলার ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

মানব-কেন্দ্রিক কর্মজীবন: অনেক মেয়ে মানুষের সাথে কাজ করতে এবং তাদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে আগ্রহী এমন কর্মজীবন বেছে নেয়। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক কাজ বা অন্যান্য সহায়ক পেশার প্রতি আকর্ষণের সাথে যুক্ত হতে পারে।

মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে: সামাজিক-জ্ঞানাত্মক তত্ত্ব: এই তত্ত্ব অনুসারে, মেয়েরা তাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে শিখে এবং বুঝতে তাদের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে। 

নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে একে অপরকে ভালোভাবে বোঝা সম্ভব। বিবাহ পূর্বেই এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে সুখী ও স্থায়ী দাম্পত্য গড়ে তোলা যায়। মনে রাখবেন, ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়। 
এএজি