Deshdeshantor24com: Bangla news portal

ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

ছোট গল্প

কল্পনায় আঁকানো সেই মেয়েটি!

কল্পনায় আঁকানো সেই মেয়েটি!
ছবি: দেশদেশান্তর২৪.কম

ল্পনা হল সৃষ্টির সূচনা। অর্থাৎ যে কল্পনায় আশা নিহিত থাকে এবং যারা সাহসী তারা কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করে। কাজেই আমি সাধ্যের মধ্যে কল্পনা করি যেন বাস্তবে রূপ দিতে পারি। 

দিনটি ছিল শুক্রবার। কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলাম। বাসের মধ্যে প্রচুর লোকজন। তাই গেটের উপরে ওঠে দাঁড়িয়ে রইলাম। কিন্তু বাসটিতে ওঠতে না ওঠতেই সিগনালে পড়ে গেল। সেখানে অপেক্ষা করতে হলো প্রায় ১০ মিনিটের মত। অবশেষে সিগনাল ছেড়ে দিলে বাসটি চলতে থাকে।

দুপাশ থেকে হালকা বাতাস গায়ে লাগছে। ভালোই লাগছে! বাসে এর আগেও চড়েছি বহুবার কিন্তু কখনও এরকম ঠান্ডা আলতো হাওয়া গায়ে লাগেনি এই প্রথমবার এমন হচ্ছে যেমনটি বিকেল বেলা বাসার দক্ষিণ পাশের বেলকনিতে মেয়েদের খোলা চুলে দাঁড়ালে চুল গুলো মিঠি হাওয়াতে উড়তে থাকে তেমনি হালকা বাতাসে নিজের মনকে দোলা দিয়ে চলছে। ঢাকার শহর ফাঁকা থাকার সুবাদে চারিদিক থেকে আসা বাতাসে মনটি যেন দুলছে। এরই মধ্যে হঠাৎ! চোখটি আমার আটকে গেলো সামনের সিটে বসা এক রহস্যময় মেয়ের দিকে। মেয়ে তো নয় বরং পরীর রাজ্য থেকে নেমে আসা পালকবিহীন পরী!  যেমনটি আমার হৃদয়ে আগেভাগেই আঁকিয়ে রেখেছি ঠিক তেমনি একজন রূপবতী মেয়ে। অর্থাৎ গুণবতী, পরহেজগার, পর্দানশীন, দ্বীনের মেহনতকারী। যিনি নিসন্দেহে একজন ধার্মিক স্ত্রী। পিতার আদর্শ কণ্যা ও সন্তানদের আদর্শ মা হবেন। 

ঠিক আমার হৃদয়ে আঁকানো মানুষটির মতই এক ড্রেসে সামনে সিটে বসে আছেন অসম্ভব সুন্দরের অধিকারী এক মেয়ে। মুখ দেখার উপায় নেই তবে কাজল কালো আঁখি দুটো চশমাতে মনে হচ্ছে চোখ দুটো যেন এক বিস্তৃত সমুদ্দুর হরিণীর মত!! চোখ সরানোর উপায় নেই, কি যে চোখে মুখে মায়া তা বলে বোঝানোর মত না। একটা মেয়ে কি করে এত সুন্দরী হতে পারে? ভেবেই চলেছে আমার মন। কোন ক্লান্তির ছায়া নেই কি আরাম করে বসে আছে বাসের সিটে। বুঝি পর্দানশীন মেয়েরা আসলে এমনই হয়ে থাকেন যেমন রূপবতী তেমনি গুণবতী। 

মনটা কেমন যেন ধড়পড় করে ওঠলো।  গুণগুণীয়ে গাইতে ইচ্ছে করছে ঐ নজরুল সংগীতটি— 

দাঁড়ালে দুয়ারে মোর

কে তুমি ভিখারিনী 

মিনতি-ভরা আঁখি

কে তুমি ঝড়ের পাখি 

কে তুমি যাদুকরী

বলো, কে তুমি যাদুকরী! 

এভাবে ভাবতে ভাবতেই কখন যে নিজের গন্তব্যে চলে এসছি তা বুঝতেই পারি নাই। হঠাৎ বাসের কন্টেকটার গন্তব্য স্থানের নাম বলে উঠলেই ধড়পড়িয়ে উঠি। কিছুটা অপ্রস্তুত হয়েই নেমে পড়তে হলো। কিন্তু নেমেও না কেমন যেন মনটা বিষন্নতা কাজ করছে। কি যেন ফেলে এসছি কিন্তু কিছুই তো ফেলে আসিনি তাহলে এমন লাগছে কেনো? জানি না! 

পৌঁছালাম বাসাতে, তবে তার সেই হরিণীর ন্যায় চোখ দুটো বার বার ভেসে উঠছে। রেশ কাটিয় তুলতে পারছি না, কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। যেভাবে দেখেছি ইচ্ছে করছে সেভাবে দেখতে কিন্তু উপায় কি! ভেবে না পেয়ে গুগলে গিয়ে ছবি খুঁজতে লাগলাম কিন্তু মিলছে না আমার দেখা সেই মেয়টির ন্যায়। খুঁজতে খুঁজতে একটি ছবি মিললেও মিলছে না মাথার তাজ, স্বচ্ছ ঐ চশমা। পরে একে একে সব ডাউনলোড করে ছবিতে এডিটের মাধ্যমেই রূপ দিলাম। অবশেষে রূপ পেলো আমার ভাবনার সেই সুহাসীর মত! যদিও আমার হৃদয়ে আঁকা মানুষটি ছবির চেয়েও গুণান্বিত। তবে নিজে দেখার ছবির মধ্যেই রূপ দিয়ে আটকে রেখে দিলাম সেই হৃদয়ে আঁকানো সুহাসিনীর প্রতিবিম্ব।

লেখক: শিক্ষার্থী ও ফিচার কলামিস্ট

 

[প্রিয় পাঠক, আপনিও দেশদেশান্তর২৪.কম অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। আত্মকথা, লাইফস্টাইল বিষয়ক, ভ্রমণ, ক্যারিয়ার,  নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুন-[email protected]-এ ঠিকানায়।]

এমআইপি

আরও পড়ুন  

কথা
কথা